Admission
জীববিজ্ঞান - জীববিজ্ঞান দ্বিতীয় পত্র - মানব শারীরতত্ত্ব -শ্বাসক্রিয়া ও শ্বসন (পঞ্চম অধ্যায়)

যে জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় জীব পরিবেশ থেকে গৃহীত অক্সিজেন দ্বারা কোষমধ্যস্থ খাদ্যবস্তুকে জারিত করে খাদ্যের স্থিতিশক্তিকে তাপ ও গতিশক্তিরূপে মুক্ত করে এবং উপজাত পদার্থ হিসেবে কার্বন ডাইঅক্সাইড ও পানি উৎপন্ন করে তাকে শ্বসন বলে।

Content added By
ফুসফুসের কৈশিক জালিকায় দেহ থেকে আগত রক্তে অক্সিজেনের চাপ থাকে 107 mm of Hg
গ্লাইকেলাইসিসের জন্য প্রয়োজনীয় এনজাইমগুলো মাইটোকন্ড্রিয়ার বাইরে সাইটোসলের মধ্যে পাওয়া যায়
অন্তশ্বসন জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়া
বহিঃশ্বসন প্রক্রিয়ায় শক্তি উৎপন্ন হয় না

মানুষের শ্বসনতন্ত্রঃ
মানুষের শ্বসন অঙ্গ হলো একজোড়া ফুসফুস (lungs)। যে পথ দিয়ে ফুসফুসে বায়ু প্রবেশ করে এবং ফুসফুস থেকে তা বহির্গত হয় তাকে শ্বসন পথ (respiratory passage) বলে। সম্মুখ নাসারন্ধ্র থেকে শ্বসন পথের শুরু। মানুষের শ্বসনতন্ত্রের পর্যায়ক্রমিক বিভিন্ন অংশগুলোকে নিচে বর্ণিত তিনটি অঞ্চলে ভাগ করে বর্ণনা করা যায়।

ক. বায়ুগ্রহণ ও ত্যাগ অঞ্চলঃ

১. সম্মুখ নাসারন্ধ্র (Anterior nostrils): নাকের সামনে অবস্থিত পাশাপাশি দুটি ছিদ্রকে সম্মুখ নাসারন্ধ্র বলে। নাক একটি হলেও ন্যাসাল সেপ্টামের মাধ্যমে দুটি নাসারন্ধ্রের বিকাশ ঘটেছে। সম্মুখ নাসারন্ধ্র সর্বদা উন্মুক্ত থাকে । সম্মুখ নাসারন্ধ্র দিয়ে বায়ু দেহের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে।

২.ভেস্টিবিউল (Vestibule) : নাসারন্ধ্রের পরে নাকের ভেতরের অংশের নাম ভেস্টিবিউল। এর প্রাচীরে অনেক লোম থাকে। লোমগুলো ছাঁকনির মত বাতাস পরিষ্কারে সহায়তা করে।

৩. নাসাগহ্বর (Nasal cavity) : ভেস্টিবিউলের পরের অংশটি নাসাগহ্বর। নাসাগহ্বরের প্রাচীরে সিলিয়াযুক্ত মিউকাস নিঃসাৰী ও অলফ্যাক্টরী কোষ থাকে। এটি আগত প্রশ্বাস বায়ুকে কিছুটা সিক্ত করে। সিলিয়াযুক্ত ও মিউকাস কোষগুলো ধুলাবালি এবং রোগজীবাণু আটকে দেয় । অলফ্যাক্টরী কোষ ঘ্রাণ উদ্দীপনা গ্রহণে সহায়তা করে।

৪. পশ্চাৎ নাসারন্ধ্র (Posterior nostrils): নাসা গহ্বরদ্বয় যে দুটি ছিদ্রের মাধ্যমে নাসাগলবিলে উন্মুক্ত হয় তাকে কোয়ানি (choanae) বা পশ্চাৎ নাসারন্ধ্র বলে। এসব ছিদ্রপথে বাতাস নাসাগলবিলে প্রবেশ করে।

৫. নাসাগলবিল (Nasopharyx) : পশ্চাৎ নাসারন্ধ্রের পরে নাসাগলবিল অবস্থিত। এর পরেই মুখ-গলবিল (oropharynx), যা স্বরযন্ত্র পর্যন্ত বিস্তৃত।

৬. স্বরযন্ত্র (Larynx) : নাসাগলবিলের নিচেরস্বরযন্ত্র। এটি টুকরো টুকরো তরুণাস্থি দিয়ে তৈরি। এগুলোর মধ্যে থাইরয়েড মাস গহ্বর তরুণাস্থি সবচেয়ে বড় এবং এটি গলার সামনে উঁচু হয়ে নাসাগলবিল ওঠে (পুরুষে)। হাত দিলে এর অবস্থান বুঝা যায় এবং বিলে । বাইরে থেকে দেখা যায়। একে Adam's Apple' স্বরযন্ত্র স্বরযন্ত্রের উপরে থাকে একটি ছোট এপিগ্লটিস শ্বাসনালি (epiglottis)। স্বরযন্ত্রে অনেক পেশি যুক্ত থাকে। এর ব্রঙ্কিওল -অভ্যন্তরভাগে থাকে মিউকাস আবরণী ও স্বররজ্জু (vocal ব্রঙ্কাস cord)। পেশির সংকোচন-প্রসারণই স্বররজ্জুর টান (tension) বা শ্লথন (relaxation) নিয়ন্ত্রণ করে। টানটান অবস্থায় বাতাসের সাহায্যে স্বররজ্জু কম্পিত হয়ে শব্দ সৃষ্টি করে। এপিগটিস খাদ্য গলাধঃকরণের সময়  স্বরযন্ত্রের মুখটি বন্ধ করে দেয়। ফলে খাদ্য স্বরযন্ত্রে প্রবেশ করতে পারে না । স্বরযন্ত্রে স্বর সৃষ্টি হয়।

 

খ.বায়ু পরিবহন অঞ্চলঃ

৭.শ্বাসনালি বা ট্রাকিয়া (Trachea) : স্বরথলির পর থেকে পঞ্চম বক্ষদেশীয় কশেরুকা পর্যন্ত বিস্তৃত প্রায় ১২. সে.মি. দীর্ঘ ও ২ সেমি ব্যাসবিশিষ্ট ফাঁপা নলাকার অংশটিকে ট্রাকিয়া বলে। এটি ১৬-২০টি তরুণাস্থি নির্মিত অর্ধবলায়ে (C-আকৃতির) গঠিত । তন্তুময় টিস্যু দিয়ে অর্ধবলয়গুলো আটকানো থাকে। ট্রাকিয়ার অন্তঃপ্রাচীরে সিলিয়াযুক্ত মিউকাস আবরণী রয়েছে । ট্রাকিয়া চুপসে যায় না বলে সহজে এর মধ্য দিয়ে বায়ু চলাচল করতে পারে। এর অন্তঃপ্রাচীরের সিলিয়া অবাঞ্ছিত বস্তুর প্রবেশ রোধ করে।

৮. ব্রঙ্কাস (Bronchus ) : বক্ষগহ্বরে ট্রাকিয়ার শেষ প্রান্ত দুটি ডান ও বাম শাখায় বিভক্ত।ডান ব্রঙ্কাসটি অপেক্ষাকৃত ছোট কিন্তু প্রশস্ত এবং  ব্রঙ্কাসটি তিনভাগে ভাগ হয়ে ফুসফুসের তিনটি খণ্ডে প্রবেশ করে।অন্যদিকে বাম ব্রঙ্কাসটি দুভাগে ভাগ হয়ে, বাম ফুসফুসের দুটি খন্ডে প্রবেশ করে। ফুসফুসের অভ্যন্তরে প্রতিটি ব্রঙ্কাস পুনঃপুনঃ বিভক্ত হয়ে অসংখ্য ক্ষুদ্রাকায় ব্রঙ্কিও (bronchiole) গঠন করে । ব্রঙ্কিওল দুধরনের - প্রান্তীয় ব্রঙ্কিওল ও শ্বসন ব্রঙ্কিওল ।

গ. শ্বসন অঞ্চলঃ

৯. ফুসফুস (Lungs) : বক্ষগহ্বরের দুপাশে দুটি ফুসফুস অবস্থিত। প্ল্যুরা (plura) নামক দ্বিস্তরী একটি পাতলা আবরণে ফুসফুসদুটি আবৃত থাকে । বাইরের স্তরটিকে প্যারাইটাল এবং ভিতরে স্তরটিকে ভিসেরাল স্তর বলে। স্তরদুটির মাঝে অবস্থিত সেরাস ফ্লুইড (scrous fluid) নামক তরল পদার্থ ফুসফুসকে ঘর্ষণজনিত আঘাত থেকে রক্ষা করে।ডান দিকের ফুসফুস তিনটি লোব (lobe) বা খণ্ডে বিভক্ত। কিন্তু বাম ফুসফুসে দুটি। আবার লোবিউল (lobules) নামক ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশে বিভক্ত। ডান ফুসফুসে ১০টি এবং বাম ফুসফুসে ৮টি লোবিউল থাকে।
ব্রঙ্কিওলের অতিসূক্ষ্ম ও তরুণাস্থিবিহীন প্রান্তগুলোকে অ্যালভিওলার নালি (alveolar duct) বলে । প্রতিটি নালি একেকটি অ্যালভিওলার থলি (alveolar sac)-তে উন্মুক্ত হয়। প্রতিটি অ্যালভিওলার থলি কতকগুলো অ্যালভিওলাই থাকে।

(alveoli) নিয়ে গঠিত। অ্যালভিওলাইয়ের প্রাচীর একস্তর চ্যাপ্টা আবরণী কোষে গঠিত। এর চারপাশে থাকে পালমোনারি ধমনি ও শিরার কৈশিকজালিকা। অ্যালভিওলাইয়ের প্রাচীর অত্যন্ত পাতলা হওয়ায় রক্ত ও ফুসফুসের মধে অবস্থিত গ্যাসীয় পদার্থের অতি সহজে ব্যাপন ঘটে।

অ্যালভিওলাসের গঠনঃ স্কোয়ামাস এপিথেলিয় কোষে গঠিত ও কৈশিকজালিকাসমৃদ্ধ প্রকোষ্ঠের মতো গ্যাসীয় বিনিময় তলকে অ্যালভিওলাস বলে। এরা ফুসফুসের গঠনগত ও কার্যগত একক। মানুষের ফুসফুসের প্রায় ৭০-৯০ বর্গমটার আয়তনের তল জুড়ে ৭০০ মিলিয়ন (৭০ কোটি)-এরও বেশি সংখ্যক অ্যালভিওলাই রয়েছে। প্রত্যেক অ্যালভিওলাসের প্রাচীর অত্যন্ত পাতলা, মাত্র ০.১ পুরু। এর বহির্দেশ ঘন কৈশিকজালিকা-সমৃদ্ধ । কৈশিকজালিকাগুলো পালমোনারি ধমনি থেকে সৃষ্টি হয় পরে পুনর্মিলিত হয়ে পালমোনারি শিরা গঠন করে। প্রাচীরটি আর্দ্র স্কোয়ামাস (আইশাকার) এপিথেলিয়াম নির্মিত। এতে কোলাজেন ও ইলাস্টিন তন্তুও রয়েছে। ফলে শ্বসনের সময় সংকোচন-প্রসারণ সহজতর হয় অ্যালভিওলাসের প্রাচীরে ফ্যাগোসাইটিক অ্যালভিওলার ম্যাক্রোফাজ (macrophage; W.B.C) থাকে । এ ম্যাক্রোফাজ অণুজীবসহ বহিরাগত বস্তু বিনষ্ট কর দেয়।

অ্যালভিওলাস-প্রাচীরের কিছু বিশেষ কোষ প্রাচীরের অন্তঃতলে ডিটারজেন্ট (detergent)- এর মতো রাসায়নিক পদার্থ ক্ষরণ করে পদার্থকে সারফেকট্যান্ট (surfactant) বলে। পদার্থ অ্যালভিওলাস-প্রাচীরের তরল পদার্থের পৃষ্ঠটান (surface tension) কমিয়ে দেয়, ফলে শ্বাস-প্রশ্বাসের সময় ফুসফুস কম পরিশ্রমে সংকুচিত ও প্রসারিত হতে পারে। এ পদার্থ পদার্থে O, ও CO,-এর দ্রুত বিনিময়ে সাহায্য করে। এ পদার্থ অ্যালভিওলাসে আগত জীবাণু ও ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে। ২৩ সপ্তাহ বয়স্ক মানবভ্রূণে সর্বপ্রথম সারফেকট্যান্ট ক্ষরণ শুরু হয়।এ কারণে ২৪ সপ্তাহের আগে মানবভ্রূণকে স্বাধীন অস্তিত্বের অধিকারী মনে করা হয় না। অনেক দেশে তাই এ সময়কাল পর্যন্ত গর্ভপাতের অনুমতি দেয়া হয় ।

শ্বসনতন্ত্রের কাজঃ

১. শ্বসন গ্যাসের বিনিময় শ্বাসক্রিয়ার সময় পরিবেশের O2 রক্তে মিশে এবং রক্ত থেকে CO2 পরিবেশে পরিত্যক্ত হয়।
২.শক্তি উৎপাদন : শ্বসনতন্ত্রের মাধ্যমে গৃহিত O2 কোষীয় শ্বসনে ব্যবহৃত হয়ে শক্তি উৎপন্ন করে।  

৩.পানি সাম্যতা : নিঃশ্বাসের মাধ্যমে প্রতিদিন প্রায় ৪০০-৬০০ মিলিলিটার পানি দেহ থেকে বের হয়ে যায় । এতে কারনে দেহের পানির সাম্যতা বজায় রাখতে সহায়তা হয়।
৪.তাপ নিয়ন্ত্রণ নিঃশ্বাসের সময় CO2 এর সাথে দেহের কিছু তাপ নির্গত হয়ে দেহের তাপমাত্রা বজায় থাকে । 
৫.এসিড ও ক্ষারের সাম্যতা নিঃশ্বাস বায়ুর মাধ্যমে দেহের বাইরে পরিত্যক্ত হওয়ায় pH নিয়ন্ত্রণে সহায়তা হয়।
 

Content added || updated By
পেরিটোনিয়াল গহ্বর
পেরিনিয়েল গহ্বর
প্লিউরাল গহ্বর
পেরিকার্ডিয়াল গহ্বর

প্রশ্বাস-নিঃশ্বাস কার্যক্রম (Ventilation Mechanism):

যে প্রক্রিয়ায় ফুসফুসে অক্সিজেন-সমৃদ্ধ বায়ু প্রবেশ করে এবং কার্বন ডাইঅক্সাইড-সমৃদ্ধ বায়ু ফুসফুস থেকে বের হয়ে যায় তাকে শ্বাসক্রিয়া (breathing) বলে। প্রকৃতপক্ষে এটি বহিঃশ্বন প্রক্রিয়া। বক্ষগহ্বরের আয়তন হ্রাস-বৃদ্ধির ফলে ফুসফুসের আয়তন সঙ্কোচন-প্রসারণের মাধ্যমে এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। দুধরনের পেশির ক্রিয়ায় বক্ষগহ্বরের আয়তনের হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটে ।
পেশিগুলো হলো: (১) বক্ষ ও উদর গহ্বরের মাঝে অবস্থিত ডায়াফ্রাম (diaphragm) এবং (২) পর্তুকাসমূহের (ribs) ফাঁকে অবস্থিত ইন্টারকোস্টাল পেশি (intercostal muscle)। 

শ্বাসক্রিয়া দুটি পর্যায়ে সম্পন্ন হয়, যথা: (ক) প্রশ্বাস বা শ্বাসগ্রহণ এবং (খ) নিঃশ্বাস বা শ্বাসত্যাগ

প্রশ্বাস বা শ্বাসগ্রহণ (Inhalation) : ডায়াফ্রাম-পেশি সংকুচিত হলে এর কেন্দ্রীয় টেনডন (tendon) নিম্নমুখে সঞ্চালিত হয়। ফলে বক্ষগহ্বরের অনুদৈর্ঘ্য ব্যাস বেড়ে যায়। একই সময় নিম্নভাগের পশুকাগুলো (ribs) কিছুটা উপরে উঠে আসায় বক্ষগহ্বরের পার্শ্বীয় এবং অগ্র-পশ্চাৎ ব্যাসও বেড়ে যায় । ইন্টারকোস্টাল (intercostal) পেশির সংকোচনের ফলে পর্শকার শ্যাফট (shaft) উত্তোলিত হয় । এতে স্টার্ণাম উপরে উঠে সামনে সঞ্চালিত হয়। ফলশ্রুতিতে বক্ষের অগ্র- পশ্চাৎ ব্যাসসহ অনুগ্রস্থ ব্যাস বৃদ্ধি পায়।এভাবে ডায়াফ্রাম ও পর্শকা পেশির সংকোচনের ফলে বক্ষীয় গহ্বর সবদিকে বেড়ে যায়। এ কারণে ফুসফুস প্রসারিত হয়ে এর ভিতরের আয়তনও বাড়িয়ে দেয়। প্রসারিত ফুসফুসের অভ্যন্তরীণ চাপ বাতাসের সাধারণ চাপ অপেক্ষা কম হওয়ায় নাসিকা পথের ভেতর দিয়ে আসা বাতাস ফুসফুসে প্রবেশ করে।

নিঃশ্বাস বা শ্বাসত্যাগ (Exhalation) : এটি প্রশ্বাসের পর পরই সংঘটিত একটি নিষ্ক্রিয় প্রক্রিয়া। প্রশ্বাসে অংশগ্রহণকারী পেশিগুলোর প্রসারণ বা শিথিলতার জন্য নিঃশ্বাস ঘটে।নিঃশ্বাসের সময় প্রশ্বাসকালে অংশগ্রহণকারী পেশিগুলো স্থিতিস্থাপকতার জন্য পূর্বাবস্থায় ফিরে আসে। তখন 1 পর্শকাগুলো নিজস্ব ওজনের জন্য নিম্নগামী হয়; উদরীয় পেশিগুলোর চাপে ডায়াফ্রাম ধনুকের মতো বেঁকে বক্ষগহ্বরের আয়তন কমিয়ে দেয়; ফুসফুসীয় পেশি পূর্বাবস্থায় ফিরে যায়; এবং প্যুরার অন্তঃস্থ চাপ ও ফুসফুসের বায়ুর চাপ বেড়ে যায়। বাতাস তখন ফুসফুস থেকে নাসিকা পথে বেরিয়ে গেলে ফুসফুসের আয়তনও কমে যায়। শ্বসন একটি ছন্দময় প্রক্রিয়া (পূর্ণ বয়স্ক সুস্থ মানুষে বিশ্রামকালে এ প্রক্রিয়া প্রতিমিনিটে ১৪-১৮ বার এবং নবজাত শিশুতে ৪০ বার সংঘটিত হয়) তবে ব্যায়াম বা অন্য কারণে শ্বসনের হার দ্রুত হয় বলে উদরীয় পেশিও তখন শ্বসন কাজে যোগ দেয়।

Content added || updated By

প্রশ্বাস নিঃশ্বাস নিয়ন্ত্রণঃ

স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিয়ন্ত্রিত হয় বলে প্রশ্বাস-নিঃশ্বাস নিয়ে আমরা তেমন ভাবি না। পশ্চাৎ মস্তিষ্কের মেডুলায় শ্বসনের এ পনস কেন্দ্র অবস্থিত । কেন্দ্রের নিচের অংশটি (অংকীয়) প্রশ্বাস কেন্দ্র। এটি প্রশ্বাসের হার ও গভীরতা বাড়ায় । এ কেন্দ্রের পৃষ্ঠীয় ও পার্শ্বদেশ প্রশ্বাস বন্ধ করে নিঃশ্বাস ত্বরান্বিত করে । এ অংশগুলো নিঃশ্বাস কেন্দ্র। প্রশ্বাস ও নিঃশ্বাস কেন্দ্র ইন্টারকোস্টাল স্নায়ুর সাহায্যে ইন্টারকোস্টাল পেশির সঙ্গে সংযোগ রক্ষা করে। ব্রঙ্কিওল ও ব্রঙ্কাই মস্তিষ্কের সঙ্গে ভ্যাগাস স্নায়ুর সাহায্যে যুক্ত। ডায়াফ্রাম ও ইন্টারকোস্টাল পেশিতে প্রেরিত ছন্দময় স্নায়ু-উদ্দীপনার ফলে এসব অংশে শ্বসনিক আন্দোলন ঘটে।

প্রশ্বাসের কারণে ফুসফুস ফুলে উঠে, ব্রঙ্কিওলে অবস্থিত রিসেপ্টরগুলো সটান হয়, ফলে তা উদ্দীপ্ত হয়ে ভ্যাগাস স্নায়ুর মাধ্যমে আরও বেশি স্নায়ু উদ্দীপনা নিঃশ্বাস কেন্দ্রে প্রেরণ করে। তখন প্রশ্বাস কেন্দ্র ও প্রশ্বাস সাময়িক বন্ধ থাকে। বহিঃস্থ ইন্টারকোস্টাল পেশি তখন শিথিল হয়, ফুসফুসের টিস্যু চুপসে যায়, ফলে নিঃশ্বাস ঘটে। এরপর ব্রঙ্কিওলগুলো সটান থাকে না, রিসেপ্টরগুলো উদ্দীপ্ত থাকে না। প্রশ্বাস কেন্দ্র তখন নিষ্ক্রিয় হয়ে যায় এবং আবার প্রশ্বাস শুরু হয়। এভাবে সম্পূর্ণ চক্রটি আজীবন ছন্দায়িত্ব পুনরাবৃত্ত হয়।

"শ্বসনের মৌলিক ছন্দ মেডুলা নিয়ন্ত্রণ করে। এখানে সরবরাহকৃত সমস্ত স্নায়ু কেটে ফেললেও ছন্দ অব্যাহত থাকে । তবে স্বাভাবিক অবস্থায় বিভিন্ন উদ্দীপনা এ মৌলিক ছন্দের হেরফের ঘটাতে পারে। প্রধান যে উদ্দীপনা প্রশ্বাস-নিঃশ্বাসকে নিয়ন্ত্রণ করে তা হচ্ছে রক্তে O2 এর চেয়ে CO2 এর ঘনত্ব। CO2-এর লেভেল বেড়ে গেলে (যেমন-ব্যায়ামের সময়)রক্ত-সংবহনতন্ত্রের ক্যারোটিড ও অ্যাওর্টিক বডিজ (carotid and aortic bodies)-এ অবস্থিত কেমোরিসেপ্টর উদ্দীপ্ত হয়ে প্রশ্বাস কেন্দ্রে স্নায়ু-উদ্দীপনা প্রেরণ করে। প্রশ্বাস কেন্দ্র তখন বহিঃইন্টারকোস্টাল ও ফ্রেনিক স্নায়ুর মাধ্যমে বহিঃইন্টারকোস্টাল পেশি ও ডায়াফ্রামে স্নায়ু-উদ্দীপনা প্রেরণ করে এদের সংকোচনের গতি বড়িয়ে দেয়। এতে প্রশ্বাসের হার বেড়ে যায়। সুযোগ পেলে CO2 দেহে দ্রুত ক্ষতিকর হয়ে উঠতে পারে । দেহে দ্রবীভূত হয়ে যে এসিড উৎপন্ন করে তা এনজাইম ও বিভিন্ন প্রোটিন বিনাশ শুরু করে। বার্তাসে CO, ঘনত্ব ০.২৫% বাড়লে শ্বসনের হার দ্বিগুণ হয়ে যায়। অন্যদিকে, বাতাসে যদি O, ঘনত্ব ২০% থেকে ৫% এ নেমে আসে তাহলেও শ্বসনের হার দ্বিগুণ হয়ে যায়) O2-এর ঘনত্বও শ্বসন হারে প্রভাব ফেলে। তবে স্বাভাবিক পরিবেশে প্রচুর O2 থাকে বলে প্রভাবও পড়ে কম। O, ঘনত্বের প্রতি সংবেদী কেমোরিসেপ্টরগুলো মেডুলা এবং অ্যাওর্টিক ও ক্যারোটিড বডিজে অবস্থান করে (এসব বডি CO2 রিসেপ্টার হিসেবেও কাজ করে)।সীমিত মাত্রায় শ্বসনের (প্রশ্বাস-নিঃশ্বাস) হার ও গভীরতাকে ঐচ্ছিক নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। যেমন- বাতাস বুকের ভেতর টেনে নিয়ে ধরে রাখা যায়। ঐচ্ছিক নিয়ন্ত্রণ সজোের শ্বসন, বক্তৃতা করা, গান গাওয়া, হাঁচি ও কাঁশি দেওয়ার জন্যেও হতে পারে । নিয়ন্ত্রণ একবার প্রয়োগ হয়ে গেলে মস্তিষ্কের সেরেব্রাল হেমিস্ফিয়ারে যে স্নায়ু উদ্দীপনার সৃষ্টি হয় তা শ্বসন কেন্দ্রে পৌঁছে নির্দেশ কার্যকর করে।

সটান (strech) রিসেপ্টর ও কেমোরিসেপ্টরের মাধ্যমে প্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণ একটি নেতিবাচক প্রতিফল । কিন্তু নেতিবাচক প্রতিফল সেরেব্রাল হেমিস্ফিয়ারের ঐচ্ছিক ক্রিয়ায় বাতিল হয়ে যেতে পারে ।

Content added By

গ্যাসীয় (O2 ও CO2) পরিবহন (Transport of Gases):

ফুসফুস গহ্বরের ভিতরে অ্যালভিওলাই-এর বাতাস এবং এগুলোর প্রাচীরে অবস্থিত কৈশিকনালির রক্তের মধ্যে অক্সিজেন ও কার্বন ডাইঅক্সাইডের বিনিময় ঘটে।

ক. অক্সিজেন পরিবহন (Transport of Oxygen)

প্রশ্বাসের মাধ্যমে আগত বাতাস ফুসফুসে পৌছালে ফুসফুসের অ্যালভিওলাইয়ে O2-এর চাপ থাকে ১০৭ mmHg। অন্যদিকে, ফুসফুসের কৈশিকজালিকায় দেহ থেকে আগত রক্তে O2– চাপ থাকে ৪০ mmHg। সুতরাং ফুসফুস থেকে O2 ব্যাপন প্রক্রিয়ায় ফুসফুসীয় ঝিল্লি ভেদ করে রক্তে প্রবেশ করে। এই ব্যাপন যতক্ষণ না রক্তে O2-এর চাপ ১০০ mmHg উপনীত হয় ততক্ষণ অব্যাহত থাকে। রক্তে অক্সিজেন দুইভাবে পরিবাহিত হয়: ভৌত দ্রবণরূপে ও রাসায়নিক যৌগরূপে।

i. ভৌত দ্রবণরূপে : প্রতি ১০০মি.লি. রক্তে ০.২ মি.লি. অক্সিজেন ভৌত দ্রবণরুপে পরিবাহিত হয়। দ্রবীভূত অংশই রক্তে ১০০ mmHg চাপ সৃষ্টির জন্য দায়ী। তবে অংশের পরিমাণ খুব সামান্য বলে তা টিস্যুকোষে অক্সিজেন সরবরাহ কাজে বিশেষ ভূমিকা পালন করে না। তবে অক্সিজেন ও হিমোগ্লোবিনের সংযোজন কাজে এর বিশেষ ভূমিকা রয়েছে।

ii.রাসায়নিক যৌগরূপে : O2রক্তে প্রবেশের পর লোহিত কণিকায় অবস্থিত হিমোগ্লাবিন-এর সাথে যুক্ত হয়ে অক্সি-হিমোগ্লোবিন গঠন করে। এটি একধরনের শিথিল রাসায়নিক যৌগ, যা অক্সিজেনের চাপ কমে গেলে পুনরায় বিযুক্ত হয়। এ সংযোজন রক্তে অক্সিজেনের দ্রবীভূত অংশের চাপের উপর নির্ভরশীল। এ চাপ যত বাড়ে হিমোগ্লোবিন অক্সিজেনের সাথে তত বেশি সংযুক্ত হয়।

Hb4+4O2⇋4HbO2 [Hb= হিমোগ্লোবিন ]

খ. কার্বন ডাইঅক্সাইড পরিবহন (Transport of Carbon dioxide):

শর্করা জারণের সময় কোষে CO2 সৃষ্টি হয়। এই CO2 দেহের জন্য ক্ষতিকর। কোষ থেকে CO2 রক্তে পরিবাহিত হয়ে ফুসফুসে পৌঁছায় এবং ফুসফুস থেকে বায়ুতে মুক্ত হয়। নিচে বর্ণিত তিনটি ভিন্ন পদ্ধতিতে CO2 রক্তে পরিবাহিত হয়।

i. ভৌত দ্রবণরূপে : কিছু পরিমাণ (৫%) CO2 রক্তরসের পানির সাথে বিক্রিয়া করে কার্বনিক এসিড গঠন করে।

 H2O + CO2 → H2CO3 (কার্বনিক এসিড)

এ বিক্রিয়ায় কার্বনিক অ্যানহাইড্রেজ এনজাইম প্রভাবক হিসেবে কাজ করে।

প্রতি হাজার CO2 অণুর মধ্যে মাত্র এক অণু H2CO3 রূপে দ্রবণে উপস্থিত থাকে। সুতরাং, CO2-এর খুব সামান্য অংশই H2CO3 রূপে পরিবাহিত হয়।

ii. কার্বামিনো যৌগরুপে :

টিস্যুকোষ থেকে রক্তের প্লাজমায় আগত CO2 -এর কিছু অংশ লোহিত কণিকায় প্রবেশ করে। লোহিত কণিকার মধ্যে যে হিমোগ্লোবিন থাকে তার গ্লোবিন (প্রোটিন) অংশের অ্যামিনো গ্রুপের-(NH2) সাথে CO2 যুক্ত হয়ে কার্বামিনোহিমোগ্লোবিন যৌগ গঠন করে।CO2-এর একাংশ প্লাজমা প্রোটিনের সাথে সরাসরি যুক্ত হয়ে কার্বামিনোপ্রোটিন গঠন করে।

মোট CO 2-এর শতকরা ২৭ ভাগ কার্বামিনো যৌগরূপে পরিবাহিত হয়। প্রতি ১০০ মি.লি. রক্তে এর পরিমাণ ৩ মি.লি. যার ২ মি.লি কাৰ্বামিনোহিমোগ্লোবিনরূপে এবং ১ মি.লি কার্বামিনোপ্রোটিনরূপে পরিবাহিত হয়।

iii. বাইকার্বোনেট যৌগরূপে : 

CO2-এর বেশির ভাগই (৬৫%) রক্তে বাইকার্বোনেটরূপে পরিবাহিত হয়। এটি- (১) NaHCO3– রূপে প্লাজমার মাধ্যমে এবং (২) KHCO3 -রূপে লোহিত কণিকার মাধ্যমে পরিবাহিত হয়।

টিস্যুরস থেকে CO2 প্রথমে প্লাজমায় ও পরে লোহিত কণিকায় প্রবেশ করে। কার্বনিক অ্যানহাইড্রেজ এনজাইমের উপস্থিতিতে লোহিত কণিকার মধ্যে CO2 পানির সাথে বিক্রিয়া করে কার্বনিক এসিড (H2CO3) উৎপন্ন করে। রক্তরসে কার্বনিক অ্যানহাইড্রেজ অনুপস্থিত থাকায় রক্তরসে খুব কম মাত্রায় কার্বনিক এসিড উৎপন্ন হয়।

লোহিত কণিকায় উৎপন্ন H2CO3 বিশ্লিষ্ট হয়ে H+ ও HCO3– আয়নে পরিণত হয়। লোহিত কণিকায় বেশি মাত্রায় HCO3– সঞ্চিত হওয়ায় এর ঘনত্ব প্লাজমার তুলনায় বেশি হয়।

আয়ন লোহিত কণিকা থেকে প্লাজমায় পরিব্যাপ্ত (diffuse) হয় এবং পাজমার Na+ আয়নের সাথে মিলে NaHCO3 উৎপন্ন করে। লাহিত কণিকার মধ্যে K+ আয়নের সাথে HCO3– বিক্রিয়া করে KHCO3 এ পরিণত হয়।

লোহিত কণিকা থেকে প্লাজমায় HCO3– আয়ন আগমনের সাথে সমতা রেখে প্লাজমা থেকে CI– লোহিত কণিকায় প্রবেশ করে এবং লোহিত কণিকায় K+  আয়নের সাথে যুক্ত হয়ে KCI গঠন করে। লোহিত কণিকা থেকে HCO3 আয়ন বেরিয়ে আসায় ঋণাত্মক আয়নের যে ঘাটতি হয় প্লাজমার ক্লোরাইড (CI–) আয়ন লোহিত কণিকায় প্রবেশ করে সে ঘাটতি পূরণ করে। একে ক্লোরাইড শিফট (chloride shift) বলে। এর প্রথম বর্ণনাকারী জার্মান শারীরবৃত্ত্ববিদ হার্টগ জ্যাকব হ্যামবার্গার (Hartog Jacob Hamburger)-এর নাম অনুসারে ক্লোরাইড শিফটকে হ্যামবার্গার শিফটও বলা হয়।

Content added By

শ্বসনে শ্বাসরঞ্জকের ভূমিকা ( Role of Respiratory Pigments during Respiration) : হিমোগ্লোবিন হচ্ছে রক্তের লোহিত কণিকায় বিস্তৃত লাল বর্ণের প্রোটিনধর্মী ভারী পদার্থ। এর বর্ণের জন্যই রক্ত লাল দেখায় । হিমোগ্লোবিন শ্বসন গ্যাস অক্সিজেন পরিবহনে প্রধান ভূমিকা পালন করে, কিছু পরিমাণ কার্বন ডাইঅক্সাইডও বহন করে। চারটি একক নিয়ে গঠিত হিমোগ্লোবিন একটি গোল অণু। এর প্রতিটি একক পলিপেপটাইড জাতীয় প্রোটিন গ্লোবিন (globin) এবং লৌহগঠিত হিম (heme) নিয়ে গঠিত। রক্তে হিম ও গ্লোবিন ১ : ২৫ অনুপাতে উপস্থিত থাকে। হিমের ৩৩.৩৩% লৌহ (Fe) পূর্ণবয়স্ক মানুষের সমগ্র রক্তে মাত্র ৩ গ্রাম লৌহ থাকে।

i. অক্সিজেন পরিবহন : শ্বসনের সময় অক্সিজেন ব্যাপন প্রক্রিয়ায় 'ফুসফুস থেকে রক্তে প্রবেশ করে। রক্তে প্রবিষ্ট সমস্ত অক্সিজেনই মুক্ত অবস্থায় থাকে না। এর এক বড় অংশ লোহিত কণিকার হিমোগ্লোবিনের সাথে যুক্ত হয়ে অক্সিহিমোগ্লোবিন (oxyhaemoglobin) নামে অস্থায়ী যৌগ গঠন করে। এ যৌগ গঠন রক্তরসে (প্লাজমায়) অক্সিজেনেরপরিমাণের উপর নির্ভর করে। রক্তরসে যত বেশি অক্সিজেন দ্রবীভূত হবে তার সাথে সংগতি রেখে অক্সিহিমোগ্লোবিন যৌগ উৎপন্ন হবে। অন্যদিকে, অক্সিজেনের পরিমাণ যে হারে কমে যাবে যৌগ সে হারে ভেঙে যাবে এবং অক্সিজেন মুক্ত হয়ে রক্তরসে প্রবেশ করবে।


ii. কার্বন ডাইঅক্সাইড পরিবহন : অন্যদিকে, CO2 হিমোগ্লোবিনের সাথে বিক্রিয়া করে কার্বোমিনো হিমোগ্লোবিন নামক অস্থায়ী যৌগ গঠন করে। কার্বোমিনো হিমোগ্লোবিন-সমৃদ্ধ রক্ত দেহের বিভিন্ন অঙ্গ থেকে হৃৎপিন্ড হয়ে  পরিশোধনের জন্য ফুসফুসে গমন করে।

দেহে রক্ত পরিবহনের সময় বেশ কিছু পরিমাণ অক্সিজেন ব্যাপন প্রক্রিয়ায় রক্তরস থেকে স্বল্প অক্সিজেনযুক্ত টিস্যুরসে চলে যায়। ফলে রক্তরসে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যায়। হিমোগ্লোবিন তখন তার সাথে যুক্ত অক্সিজেন ছড়াতে শুরু করে। এভাবে অক্সিজেন প্রথমে রক্তরসে ও পরে টিস্যুরসে চলে যায়।

Content added By
উপজিহ্বা খাদ্যদ্রব্য শ্বাসনালিতে প্রবেশে বাধা দান করে
প্রশ্বাসের সময় ফুসফুস প্রসারিত হয়
ব্যাপন প্রক্রিয়ায় অক্সিজেন বায়ুথলি থেকে কৈশিক নালির রক্তে প্রবেশ করে
ফুসফুসের কৈশিক নালিতে অক্সিজেন রক্তের হিমোগ্লোবিনের সঙ্গে বিক্রিয়া করে স্থায়ী যৌগ অক্সিহিমোগ্রোবিন তৈরি করে

সাইনুসাইটিস (Sinusitis)

মাথার খুলিতে মুখমন্ডলীয় অংশে নাসাগহ্বরের দুপাশে অবস্থিত বায়ুপূর্ণ চারজোড়া বিশেষ গহ্বরকে সাইনাস বা প্যারান্যাসাল সাইনাস (paranasal sinus) বলে। এসব সাইনাস যদি বাতাসের বদলে তরলে পূর্ণ থাকে এবং সে তরল যদি জীবাণুতে (ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক)সংক্রমিত হয় তখন সাইনাসের মিউকাস ঝিল্লিতে প্রদাহের সৃষ্টি হয়। ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া বা ছত্রাকের সংক্রমণে সাইনাসের মিউকাস ঝিল্লিতে সৃষ্ট প্রদাহকে সাইনুসাইটিস বলে। সাইনুসাইটিস আট সপ্তাহের কম সময় থাকলে তাকে অ্যাকিউট সাইনুসাইটিস (acute sinusitis) এবং তিন  মাসের অধিককাল থাকলে তাকে ক্রনিক সাইনুসাইটিস(chronic sinusitis) বলে ।

রোগের কারণঃ

১. সাইনাসগুলো বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস (Human respiratory syncytial virus, Paraintlueza virus, Metapneumo virus), ব্যাকটেরিয়া (Streptococcus pneumoniae, Haemophilus influenzae) এবং কিছু ক্ষেত্রে ছত্রাক দ্বারা আক্রান্ত হলে সাইনুসাইটিস হতে পারে। 

২. ঠাণ্ডাজনিত কারণে ; অ্যালার্জিজনিত কারণে; ব্যবধায়ক পর্দার অস্বাভাবিকতায় সাইনাস গহ্বর অবরুদ্ধ হয়ে; নাকে পলিপ (polyp) সৃষ্টির কারণে; নাসাগহ্বরের মিউকোসা স্ফীতির ফলে নাসাপথ সরু হয়ে ক্রনিক সাইনুসাইটিস হতে পারে।

৩. দাঁতের ইনফেকশন থেকে বা দাঁত তুলতে গিয়েও সাইনাসে সংক্রমণ হতে পারে। 

৪. যারা হাঁপানির সমস্যায় ভোগে তাদের দীর্ঘস্থায়ী সাইনুসাইটিস দেখা যায়।

৫. সাধারণত ঘরের পোকামাকড়, ধুলাবালি, পেস্ট, তেলাপোকাজনিত বায়ুবিদূষণ যেসব অ্যালার্জেন ধারন তাদের প্রভাবে এ রোগের সংক্রমণ দেখা দিতে পারে।

৬. ইউশিয়ান নালির (custachian tube) সামান্য অস্বাভাবিকতায় সাইনাস গহ্বর অবরুদ্ধ হয়ে এবং সংক্রমণের ফলে সাইনুসাইটিস হতে পারে।

রোগের লক্ষণঃ

১. নাক থেকে ঘন তরল বের হতে থাকে। এটি সাধারণত হলদে বা সবুজ বর্ণের হয় এবং তাতে পুঁজ বা রক্ত থাকতে পারে। 

২. তীব্র দীর্ঘ ও বিরক্তিকর মাথা ব্যাথা লেগেই থাকে যা সাইনাসের বিভিন্ন অঞ্চলে হতে পারে।

৩. মাথা নাড়াচাড়া করলে, হাঁটলে বা মাথা নিচু করলে ব্যথার তীব্রতা আরো বেড়ে যায়।

৪. জ্বর জ্বর ভাব থাকে, কোন কিছুতেই ভালো লাগে না এবং অল্পতেই ক্লান্ত হয়ে যায় । ৫. নাক বন্ধ থাকে, নিঃশ্বাসের সময় নাক দিয়ে বাজে গন্ধ বের হয়।

জটিলতা

সাইনুসাইটিস সংক্রান্ত জটিলতা কেবল নাসিক গহ্বর ঘিরেই অবস্থান করে না, বরং সাইনাসগুলোর অবস্থান চোখ। ও মস্তিষ্কের মতো অত্যন্ত সংবেদনশীল অঙ্গের সংলগ্ন হওয়ায় জীবাণুর সংক্রমণ শুধু সাইনাসেই সীমাবদ্ধ না থেকে রক্তবাহিত হয়ে চোখ ও মস্তিষ্কে পৌঁছালে মারাত্মক জটিলতা সৃষ্টি হয়। মস্তিষ্কে সংক্রমণের ফলে মাথাব্যথা, দৃষ্টিহীনতা থেকে শুরু করে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। চোখে সংক্রমণের ফলে পেরিঅরবিটাল ও অরবিটাল সেলুলাইটিসসহ আরও অনেক জটিলতা দেখা দিতে পারে।

প্রতিকার

স্বেচ্ছাসতর্কতা : সাইনাসে জমাট বেঁধে অবস্থিত তরলকে বিগলিত করে সাইনাসকে চাপমুক্ত ও স্বাভাবিক রাখতে নিম্নোক্ত পদক্ষেপগুলো অত্যন্ত কার্যকর হতে পারে।

গরম পানিতে ভিজিয়ে, চিপড়ে একখন্ড কাপড় প্রতিদিন বারবার মুখমণ্ডলে চেপে ধরা; মিউকাস তরল করতে প্রচুর পানি পান করা; প্রতিদিন ২-৪ বার নাক দিয়ে বাষ্প টেনে নেওয়া; দিনে কয়েকবার ন্যাসাল স্যালাইন স্প্রে করা; আর্দ্রতা প্রতিরোধক ব্যবহার করা: যন্ত্রের সাহায্যে নাকের ভেতর স্ববেগে পানি প্রবাহিত করে সাইনাস পরিষ্কার রাখা; বন্ধ নাক খোলার জন্য ন্যাসাল স্প্রে ব্যবহারে সতর্ক থাকা প্রথম দিকে ন্যাসাল স্প্রে ভালো কাজ করলেও ৩-৫ দিন একনাগাড়ে ব্যবহার করলে অবস্থা আরও খারাপ হতে পারো; নাক বন্ধ অবস্থায় উড়োজাহাজে না চড়াই ভালো; এবং মাথা নিচু করে শরীর বাঁকানো অনুচিৎ।

ওষুধ প্রয়োগ : অ্যাকিউট সাইনুসাইটিসের চিকিৎসায় ওষুধের দরকার হয় না। তবে প্রয়োজনে দুসপ্তাহের চিকিৎসা চলতে পারে। জুনিক সাইনুসাইটিসের চিকিৎসা চলে ৩-৪ সপ্তাহ। ছত্রাকজনিত সাইনুসাইটিসের চিকিৎসায় বিশেষ ধরনের ওষুধ ব্যবহৃত হয়। অ্যান্টিবায়োটিকসহ সমস্ত ওষুধ ব্যবহারে চিকিৎসকের পরামর্শ ও প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী হতে হবে। 

কোনো শিশু যদি নাক দিয়ে তরল-নির্গমনসহ ২-৩ সপ্তাহ ধরে কাশিতে, ১০২.২° F জুরে, মাথাব্যথা ও প্রচন্ড চোখফোলা অসুখে ভোগে তাহলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের নির্দেশে অ্যান্টিবায়োটিকের প্রয়োগ শুরু করতে হবে।

Content added By
দু'চোখের মাঝখানে
নাকের দুপাশের ম্যাক্সিলারি অঞ্চলে
চোখের উপরে
গালে
ফ্রন্টাল সাইনাস
ম্যাক্সিলারি সাইনাস
স্ফেনয়েড সাইনাস
অক্সিপিটাল সাইনাস

ওটিটিস মিডিয়া (Otitis media): মধ্যকর্ণের সংক্রমণ কানের ভেতরে বা বাইরে যে কোন অংশে সংক্রমণজনিত প্রদাহকে ওটিটিস (otitis) বলে। কানের মধ্যকর্ণে সংক্রমণজনিত প্রদাহকে বলা হয় ওটিটিস মিডিয়া) (otitis media/middle car infection)। গলবিলের মধ্যকর্ণের সংযোগ স্থাপনকারী ইউস্টেশিয়ান নালি (custachian tube) টি অধিকাংশ সময়ই বন্ধ থাকে, শুধু ঢোকগেলার সময় খোলা থাকে কোনো কারণে কোনো জীবাণু এ নালি দিয়ে এসে মধ্যকর্ণে প্রদাহ সৃষ্টি করলে তাকে ওটিটিস মিডিয়া বলে। বয়স্কদের তুলনায় শিশুরা এরোগে বেশি আক্রান্ত হয়। স্থায়িত্বের ভিত্তিতে ওটিটিস মিডিয়া দুরকম হতে পারে : 
(১) স্বল্পস্থায়ী বা অ্যাকিউট (acute otitis media) ও (২) দীর্ঘস্থায়ী বা ক্রনিক (chronic otitismedia)। এ দুধরনের কর্ণপ্রদাহকে যথাক্রমে তীব্র কর্ণপ্রদাহ ও তরল জমাট কর্ণপ্রদাহ।


রোগের কারণঃ যদি কোনো কারণে ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া বা ছত্রাক গলবিলে অবস্থান করে তখন এসব জীবাণু ইউস্টেশিয়ান নালির মাধ্যমে মধ্যকর্ণে প্রবেশ করে এবং সেখানে সংক্রমণ ঘটায়। ভাইরাসের মধ্যে Respiratory syncytial virus এবং ব্যাকটেরিয়ার মধ্যে Streptococcus pneumoniae, Haemophilus influenzae, Moraxella catarrhalis অধিক সংক্রমণ ঘটায়। সংক্রমণের কর্ণপটহ ফলে মধ্যকর্ণে ক্ষত সৃষ্টি হয়ে প্রদাহ হতে পারে। প্রদাহ হওয়ার জন্য জলীয় ও ইউস্টেশিয়ান নালি মিউকাস দিয়ে কান ভরাট হয় এবং ঐ কানে অধিক চাপ সৃষ্টি হয়। এ অবস্থা চলতে থাকলে মধ্যকর্ণে ব্যাকটেরিয়ার সক্রিয় সংক্রমণে টিমপেনিক পর্দায় (কর্ণপটহ) ক্ষত হয়ে ছিদ্র হতে পারে এবং প্রচুর পরিমাণে ঘন পুঁজ সৃষ্টি হয়ে বহিকর্ণদিয়ে গড়িয়ে কানের বাইরে আসতে পারে। একে অটরিয়া (otorrhea) বলে।

ওটিটিস মিডিয়ার লক্ষনঃ ওটিটিস মিডিয়া হচ্ছে বিশেষ করে শিশুদের শ্বাসনালির উপরের অংশে সংক্রমণজনিত একটি অসুখ। বিভিন্ন ধরনের ওটিটিস মিডিয়া থাকলেও পরস্পরের মধ্যে পার্থক্য সামান্যই। তাই নিচে সব ধরনের ওটিটিস মিডিয়ার লক্ষণগুলোকে সম্মিলিতভাবে উল্লেখ করা হলো । কান চুলকান ও জোরে কান টানা; অতিরিক্ত কান্নাকাটি; লোকজনকে ব্যতিব্যস্ত করে তোলা; ঘুমে ব্যাঘাত; ১০০.৪°F -এর বেশি দেহতাপসহ জ্বর; প্রচন্ড মাথা ব্যথা; ক্ষুধামান্দ্য, কাশি ও নাক দিয়ে পানি ঝরা; কান ব্যথা ও কানে চাপ অনুভব করা; কান ভোঁ ভোঁ করা বা গুন-গুন ধ্বনি শোনা; বমি বা ডায়ারিয়া; কানের পর্দা ফেটে গেলে পিনা (বহিঃকর্ণ) গড়িয়ে তরল পদার্থ (রক্ত বা পুঁজ) নির্গমন; দেহের ভারসাম্য রক্ষায় সমস্যা; এবং শ্রবণ সমস্যা (শ্রবণশক্তি হ্রাস থেকে বধিরতা)।

ওটিটিস মিডিয়ার প্রতিকারঃ ওটিটিস মিডিয়া যেহেতু শিশুদের অসুখ হিসেবে পরিচিত তাই দেশের ভবিষ্যৎ বংশধরদের নিরোগ দেহ কামনায় উরীব থাকাটাই স্বাভাবিক। এ রোগে আক্রান্ত হলে নিচে উল্লেখিত পরামর্শ মেনে চলা একান্ত দরকার। ধূমপান এড়িয়ে চলতে হবে (নিজের ক্ষেত্রে) বা শিশুকে অন্যের ধূমপানের আওতামুক্ত রাখতে হবে; বায়ু দূষণ থেকে দূরে থাকতে হবে; নিজেকে ও শিশুকে অনাক্রম্য করে রাখতে হবে; এক বছর বা তারও বেশি (সম্ভব হলে) কাল পর্যন্ত মায়ের বুকের দুধ খাওয়াতে হবে; বোতলে দুধ খাওয়াতে হলে শিশুকে উলম্ব অবস্থায় খাওয়াতে হবে; কানের পাশে সেঁক দিতে হবে। বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শে ব্যথা ও জীবাণুনাশক (অ্যান্টিবায়োটিক) ওষুধ বা কানের ড্রপ ব্যবহার করতে হবে; যারা ঘনঘন এ অসুখে আক্রান্ত হয় তাদের ক্ষেত্রে চিকিৎসকরা টিমপেনোস্টোমি টিউব (tympanostomy tube) নামে বিশেষ নালির সাহায্যে বিশেষ চিকিৎসা করে থাকেন ।

Content added By

ধূমপায়ী ও অধূমপায়ী মানুষের ফুসফুসের এক্স-রের তুলনা (Comparison Between the X-Ray Film of the Lungs of Smoker and Nonsmoker): একটি সিগারেটের শলায় প্রায় ৪ হাজার বিভিন্ন রাসায়নিক থাকে। ধূমপানের ফলে এগুলো দেহের ভেতরে, বিশেষ করে ফুসফুসে প্রবেশ করে দেহকে অসুস্থ করা শুরু করে। (সিগারেটে রাসায়নিক থাকে তার মধ্যে নিকোটিন, আর্সেনিক, মিথেন, অ্যামোনিয়া, কার্বন মনোক্সাইড, হাইড্রোজেন সায়ানাইড উ ইত্যাদি প্রধান। একজন অধূমপায়ী যে কাজ চটজলদি করতে পারে, সে কাজ ধূমপায়ীর জন্য অত্যন্ত কষ্টসাধ্য ও সময়সাপেক্ষ প্রমাণিত হয়। নিচে ধূমপায়ী ও অধূমপায়ী মানুষের এক্স-রের তুলনামূলক আলোচনা করা হলো।

১. এক্স-রে ফিল্ম : ধূমপায়ীদের ক্ষেত্রে এটি কোথাও কোথাও সাদাটে বা সাদা, অধূমপায়ীর ক্ষেত্রে এটি কালো।

২. ফুসফুস : এক্স-রে দেখে চিকিৎসক ধূমপায়ী ব্যক্তির ফুসফুসে পানি জমা (pleural effusion) শনাক্ত করতে পারবেন। এ ধরনের কিছু অধুমপায়ীর এক্স-রে ফিল্মে থাকবে না ।

৩. অ্যালভিওলাই : ধূমপায়ীদের ফুসফুসের এক্স-রে ফিল্মে অ্যালভিওলাইয়ে সুষম স্বচ্ছতা দেখা যায় না কিন্তু অধূমপায়ীদের ক্ষেত্রে সুষম স্বচ্ছতা দেখা যায়। তাছাড়া ধূমপায়ীদের ফুসফুসে অধূমপায়ীর চেয়ে কম সংখ্যক অ্যালভিওলাই দেখা যায়। কারণ ধূমপানের ফলে অ্যালভিওলাই নষ্ট হয়ে যায়, কখনওই এগুলোর পূর্ণজন্ম হয় না।

৪. সিলিয়া : ফুসফুসের অন্ত:প্রাচীর জুড়ে চুলের মতো সিলিয়া (cilia) থাকে। ধূমপায়ীদের সিলিয়া অবশ হয়ে পড়ে, ফলে ধূলি ও কণা ভেতরে জমা হয়। অধূমপায়ীর ক্ষেত্রে এটি ঘটে না তাই ফুসফুস ধূলি-কণা মুক্ত থাকে । এক্স-রে তে এটিও ধরা পড়ে।

৫. প্রাচীর : এক্স-রে ফিল্মে ধূমপায়ীর ফুসফুস ও অ্যালভিওলাসের প্রাচীর পাতলা ও দুর্বল দেখায় । কিন্তু অধুমপায়ীর এদুটি অংশের প্রাচীর স্বাভাবিক পুরু এবং সবল ।

৬. এমফাইসোমা : সিগারেটের ধোঁয়ায় অ্যালভিওলাসের প্রাচীরে যে ক্ষতি হয় তার ফলে অ্যালভিওলাস আয়তনে উঠে বেড়ে যায় এবং কোনো কোনো স্থান ফেটে গিয়ে ফুসফুসে ফাঁকা স্থান সৃষ্টি করে। এদের এমফাইসোমা (emphysema) বলে। ধূমপায়ীদের এক্স-রে ফিল্মে এমফাইসেমার চিহ্ণ দেখা যায় যা অধূমপায়ীদের এক্স-রে ফিল্মে অনুপস্থিত ।

৭. ব্রঙ্কিওল : ধূমপায়ীর এক্স-রে ফিল্মে ব্রঙ্কিওলের মিউকাস গ্রন্থিগুলোতে বর্ধিত স্ফীতি দেখা যায়। অধূমপায়ীর হলে এক্স-রে ফিল্মে গ্রন্থিগুলোর গঠন স্বাভাবিক দেখায় ।

৮. টিউমার : ধূমপায়ীদের ফুসফুসের এক্স-রে ফিল্মে অনেক সময় ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র টিউমার উপবৃদ্ধির চিহ্ণ দেখা যায় যা অধূমপায়ীদের ক্ষেত্রে অনুপস্থিত।

৯. ক্যান্সার কোষ : ধূমপায়ীদের ফুসফুসের এক্স-রে ফিল্মে অনেক সময় ক্যান্সার সৃষ্টিকারী কোষের চিহ্ণ দেখা যায়।
অর্থাৎ কোথাও কোথাও সাদা ঘন জায়গা পরিলক্ষিত হয়। অধূমপায়ীদের এক্স-রে ফিল্মে ক্যান্সার সৃষ্টিকারী কোনো ধরনের কোষের চিহ্ণ দেখা যায় না।

Content added || updated By
নিউমোনিয়া
নিউমেটিক
উচ্চ রক্তচাপ
করোনারি থ্রম্বোসিস

রোগীর শ্বাস ক্রিয়া বন্ধ হয়ে গেলে বা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হলে তখন কৃত্রিম উপায়ে শ্বাস ক্রিয়া চালানোর মাধ্যমে রোগীর শ্বাস ক্রিয়া স্বাভাবিক রাখা হয় একে কৃত্রিম শ্বাস ক্রিয়া বলে। কৃত্রিম শ্বাস ক্রিয়া হাত দিয়ে বা যন্ত্রের সাহায্যে দেয়া হয়। হাত দ্বারা চাপ দিয়ে কৃত্রিম শ্বাস ক্রিয়ার লক্ষ হচ্ছে যাতে রোগীর ফুসফুস মিনিটে ১০-১২ বার ছোট ও বড় করা যায়। ছোট হওয়ার সাথে সাথে ফুসফুস থেকে বাতাস বেরিয়ে যায়, একে বলে নিঃশ্বাস। বড় হলে বাতাস প্রবেশ করে, একে বলে প্রশ্বাস। কৃত্রিম উপায়ে শ্বাস-প্রশ্বাস দেয়ার কয়েকটি প্রচলিত পদ্ধতি আছে। বহুল প্রচলিত পদ্ধতিগুলো হলো-

১. সেফার পদ্ধতি;

২. সিলভেস্টার পদ্ধতি;

৩.হোলজার নেলসন পদ্ধতি;

৪. মুখে মুখ পদ্ধতি

Content added By